লেখকঃ নাহিল মাহমুদ কাব্য
পর্ব ২
তার সাথে গেলাম, একটা চায়ের দোকানে নিয়ে গেল।
সেঃ এই মামা, দুইটা বেনসন দেন আর দুইটা রং চা করেন।
আপনি তো বড় বেয়াদব, আমার সামনে সিগারেটের কথা বলছেন।
সেঃ রাগ করলেন? দুইটা সিগারেটই আমি আপনার জন্যই চাইছি।
আমিঃ তাহলে ঠিক আছে।
সেঃ আপনি খেলে ঠিক আমি খেলে ভুল
আমিঃ না মানে
সেঃথাক আর মানে মানে করা লাগবে না সিগারেট খাবেন না
আমিঃ আপনি ও
সেঃ আমি কাল রাতে ই ছেড়ে দিয়েছি আর আপনার ও এই দুইটা ই শেষ আর কখন ও না
আমিঃ ওওও
সেঃ আপনার ফোনটা একটু দেখা যাবে?
আমিঃ ফোনের কি দেখবেন?
সেঃ কথা দিচ্ছি লক খুলবো না।
আমি ফোনটা তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
সেঃ আপনার ফোনে দেখি চার্জ নাই। আর ওয়ালপেপারে পাখির পিক কেন?
আমিঃ আপনি হয়তো জানেন না, আমি পাখী (ডানাওয়ালী পাখী) খুব ভালোবাসি। আর আমার ফোনের সমস্যা, চার্জ থাকে না ঠিকমতো।
"এই প্যাকেট টা রাখেন" বলে সে আমার দিকে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিল। ভিতরে কি আছে জিজ্ঞেস করলে সে বললো, "রুমে গিয়ে খুলে দেখবেন।" কারো সাথে প্রথম দেখা হলে যে কিছু দিতে হয়, তা আমার মাথায়ই ছিল না। নিজের কাছে নিজেকে খুব বোকা মনে হলো।
আমিঃ আচ্ছা আপনার নামটা কি
সেঃ সৈয়দা জান্নাত সারমিন পরি
আমিঃ এটা কি নাম নাকি রচনা??এমন কিছু বলুন যেটা আমি ডাকতে পারি
সেঃ আপনি আমাকে সোনা,বাবু যা ইচ্ছা ডাকতে পারেন আর আমার ডাক নাম পরি
দুজনে আলাপ শেষে আবার বট গছের নিচে বসে গল্প করলাম
সেদিনের মতো রুমে এসে প্যাকেট খুলে দেখি তার মধ্যে একটা মোবাইল। ফোনটা দেখার পর এতো খুশী হইলাম যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
কল দিলাম,
আমিঃ আপনি আমাকে মোবাইল দিছেন কেন?
সেঃ আপনি কোথাও লাইক কমেন্ট করলে সেটা যে আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডরা দেখতে পারে, এইটা কি ভুলে গেছেন?
আমিঃ মানে?
সেঃ আপনি গত একমাস যাবৎ এই ফোনের দাম জিজ্ঞেস করছিলেন একটা পেজে। তাই ভাবলাম আপনাকে ফোনটা গিফট্ করি। দামও বেশী না। ২০১৫০ টাকা মাএ।
আমিঃ সত্যি কথা বলতে এই ফোনটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। কখনও ভাবিনি ফোনটা এইভাবে আমার কাছে আসবে। ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা আমার নাই। কেউ আইফোন গিফট্ করলেও হয়তো এতো খুশী হইতাম না।
সেঃ এখন আর এতো চাপা মারতে হবে না।
এভাবেই তার সাথে আমার কথা চলতে থাকলো। সারাক্ষণ মনের মধ্যে বাজতে থাকে,"তোমরা কাউকে বলো না, কাউকে বলো না।
এইতো প্রথম একটি মেয়ে আমার প্রেমে পড়েছে, পাগল করেছে আমায় যাদু করেছে।"
"পড়েছি ভালোবাসায়, আর কে আমাকে পায়, আমিও এবার পার্কে ঘুরিবো কখনও বা সিনেমায়।"
আর মনে মনে পাখীর (ডানা ছাড়া পাখী) কথা ভাবছিলাম। আমাকে ছেড়ে তো অন্য কাউকে বিয়ে করে নিয়েছ। তিন বছরের রিলশনে একটা কলমও কখনও গিফট করে নাই। এখন দেখো তোমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে পেয়েছি।
এর দশদিন পরের ঘটনা।
তার একটা পোস্টে আমার চোখ আটকে গেলো।
"জরুরী (AB+) রক্তের প্রয়োজন। হেল্প প্লিজ।"
কল দিলাম,
আমিঃ রক্ত কার দরকার?
সেঃ আমার মামার ছেলের জন্য রক্তের প্রয়োজন।
আমিঃ আমি রক্ত দিব।
সেঃ আপনার দিতে হবে না। এমনি আপনার শরীর দূর্বল।
আমিঃ আরে সমস্যা নাই। আমি দিতে পারবো।
সেঃ আরে না টোকা দিলে পরে যাবেন আর আসছে রক্ত দিতে রক্ত আছে আপনার, আপনার ই তো আরো রক্ত লাগবে
আমিঃ আরে দিতে পারবো
সেঃ ঠিক আছে। আমার মামারই ডায়াগনেস্টিক সেন্টার আছে। ঠিকানা দিচ্ছি, চলে আসেন।
আমি ঠিকানা অনুযায়ী চলে গেলাম। ক্লিনিক দেখি অনেক লোক ওর বাসার সবাই ই ওখানে উপস্থিত ।
"আঁখী ডায়াগনেস্টিক সেন্টার " । সে আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে গেল
আমিঃ পরিচয় পর্ব পরে হবে আগে চলুন রক্ত দিতে হবে
সে তাড়াতাড়ি ভিতরের একটা চেম্বারে নিয়ে গেল।
আজ সে চোখে কালো কাজল পড়েছে। চুলগুলো খোলা। আমি হা করে তার দিকে তাকিয়ে আছি। চেম্বারে শুধু সে আর আমি ছাড়া কেউ ছিল না।একটু পর একটা নার্স এসে আমার ব্লাড সেম্পল নিয়ে গেলেন।
চলবে......
(প্রথম পর্ব পড়া না থাকলে ২য় পর্বের কিছুই বোঝা যাবে না।
Comments
Post a Comment